নারীর মর্যাদা

ভাবজড়তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম

সমাজে এমন কিছু সুবিধাবাদী লোক থাকে যাদের স্বভাবই হ’ল মানুষকে শোষণ করা কিন্তু প্রকাশ্যে তারা সে কথা বলে না৷ বরং তারা মানুষকে কু–যুক্তি দেখিয়ে বলে–প্রকৃতি বা পরমাত্মার বিধানই এই যে সমাজের কিছু মানুষ চির অবহেলিত থাকুক৷ তারা জীবনভর শুধু অমানসিক পরিশ্রম করে যাক, আর সীমিত সংখ্যক লোক প্রাচুর্যের স্রোতে গা ভাসিয়ে সুখে শান্তিতে বাস করুক৷ এটাও ভাবজড়তা ড্ডপ্সন্ধপ্প্ত্রগ্গ৷ যাঁরা বুদ্ধিমান, যাঁরা ধার্মিক তাঁরা অবশ্যই এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করবেন তথা আপোষহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন, কারণ মানুষের স্বাধীন বুদ্ধিকে যা কিছু অবরুদ্ধ করে তা’ মানুষের বুদ্ধির মুক্তিকেও সুদূরপরাহত করে৷

রাঢ়ে নারী স্বাধীনতা

(মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার তাঁর শব্দ চয়নিকা–২৬ খণ্ড গ্রন্থের বিভিন্ন স্থানে ‘নারীর মর্যাদা’ বিষয়ক অনেক কিছুই বলেছেন৷ ওই গ্রন্থ থেকে কিছু অংশ সংকলিত করে প্রকাশ করা হচ্ছে৷          –সম্পাদক)

নারীর মর্যাদা বলিষ্ঠ ত্রুটিমুক্ত সমাজ চাই

নারী কল্যাণ

সমাজে নারীর অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়, একান্তই দুর্বিসহ৷ সংঘের যারা ‘তাত্ত্বিক’, তাদের কর্ত্তব্য হ’ল অনগ্রসর মহিলাদের মধ্যে কল্যাণমূলক কাজ করা, তাদের কুসংস্কার–নিরক্ষর দূর করা, ধর্মচক্রের বন্দোবস্ত করা ও তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা৷ দেখা যায়, স্বামীর মৃত্যুর পর নারীরা আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হন৷ তাই তাঁরা যাতে স্বাধীনভাবে জীবিকার্জন করতে পারেন সে ধরণের সুযোগ তৈরী করতে হবে৷

নারীনির্যাতন ও কিছু কথা

শ্রীপার্থ

দিকে দিকে নারী নির্যাতন, নারীর শ্লীলতাহানি, যৌন হয়রানি, ধর্ষণ ও খুনের বিরুদ্ধে সর্বত্রই প্রতিবাদ আন্দোলন সংঘটিত হচ্ছে৷ সাধারণ মানুষ থেকে বুদ্ধিজীবী সকলেই এসব ঘটনার বিরুদ্ধে সরব৷ মৌন মিছিল, মোমবাতি মিছিল থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার সবই হচ্ছে৷ এসব পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদে পাশবিকতার বিরুদ্ধে জনসাধারণের এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ নিঃসন্দেহে একটা ভালো দিক৷ মানূুষের এই শুভ উদ্যোগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি কেউই কিন্তু এই ধরণের জঘন্যতম অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পেছনে যে মূল কারণগুলি নিহিত আছে সেগুলির ব্যাপারে বিশেষ আলোকপাত করতে চাইছেন না বা করছেন না৷ আর এখানেই রয়ে যাচ্ছে ত্রুটি৷ অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর অপরাধীর

নারীর মর্যাদা - কয়েকজন স্মরণীয়া মহিলা

সতী নারী গান্ধারী

আরেকটা উদাহরণ হ’ল – গান্ধারীর চরিত্র৷ গান্ধারী ছিলেন আফগান মহিলা৷ কান্দাহার

(সংস্কৃতে ‘গান্ধার’) নামে এক দেশ ছিল ও গান্ধারী ছিলেন সেই দেশের কন্যা৷ তৎকালীন ভারতীয়রা কান্দাহারকে বলতেন ‘প্রত্যন্ত দেশ’ – সুদূর সীমান্তবর্তী দেশ৷ খাঁটি ভারতবর্র্ষ বলতে যা’ বোঝায় তা’ নয়৷

কয়েকজন স্মরণীয়া মহিলা

কর্কটী রাক্ষসী

শিব তাঁর বৈদ্যক শাস্ত্র কাকে প্রথম শিখিয়েছিলেন তা’ এখন আর হলপ করে ৰলা যায় না৷ তবে যদ্দূর মনে হয়, তিনি প্রথমে তা’ শিখিয়েছিলেন কর্কটী রাক্ষসী নাম্নী জনৈকা অনার্য কন্যাকে৷ অনেকে সেকালে তাচ্ছিল্য করে অনার্যদের কখনো দানব, কখনো দৈত্য, কখনো রাক্ষস ইত্যাদিতে অভিহিত করত৷ সেকালের ভারতে কেবলমাত্র এই কর্কটী রাক্ষসীই বিসূচিকা (ওলাওঠা বা কলেরা) ও কর্কট রোগের (ক্যান্সার রোগ) চিকিৎসা করতে পারতেন৷ পরে ডগমা–প্রেষিত মানুষেরা তাঁকে হত্যা করে৷          (‘‘গণবতীসূত’’

          ‘শব্দ–চয়নিকা’, ১৬শ পর্ব)

পত্নী/জায়া/ভার্যা/কলত্র

(মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার তাঁর শব্দ চয়নিকা–২৬ খণ্ড গ্রন্থের বিভিন্ন স্থানে ‘নারীর মর্যাদা’ বিষয়ক অনেক কিছুই বলেছেন৷ ওই গ্রন্থ থেকে কিছু অংশ সংকলিত করে প্রকাশ করা হচ্ছে৷                 –সম্পাদক)

শিবজায়া পার্বতী

এবার বলতে হয় পার্বতীর কথা৷ ‘পার্বতী’ শব্দটার মানে কী কেউ হয়তো বলবেন ‘পর্বতস্য দুহিতা’, ‘পর্বতস্য কন্যা’ ইত্যর্থে পার্বতী (ষষ্ঠী তৎপুরুষ) অর্থাৎ পাহাড়ের মেয়ে৷ এখন প্রশ্ণ হচ্ছে, পঞ্চভূতাত্মক শরীরে কোন নারী কি পাহাড়ের মেয়ে হতে পারে কোন নদীকে বরং পাহাড়ের মেয়ে বললেও বলতে পারি৷ কোন নারীকে পাহাড়ের মেয়ে বলতে পারি কি সে তো বলতে পারি না৷ সুতরাং ‘পর্বতস্য কন্যা ইত্যর্থে পার্বতী’ নন, ‘পর্বতদেশীয়া কন্যা ইত্যর্থে পার্বতী’ (মধ্যপদলোপী কর্মধারয়) অর্থাৎ পাহাড়ী দেশের মেয়ে, পাহাড়ী মেয়ে ইত্যর্থে পার্বতী–পাহাড়ে যে মেয়ের বাস৷ তা’ এখন অনেকেই বলেন, পার্বতী হিমালয়ের মেয়ে৷ হিমালয়ের মেয়ে, মানে পিতা হিমালয় সে অর্থে নয়

বলিষ্ঠ ত্রুটিমুক্ত সমাজ চাই

নারী কল্যাণ ঃ সমাজে নারীর অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়, একান্তই দুর্বিসহ৷ সংঘের যারা ‘তাত্ত্বিক’, তাদের কর্ত্তব্য হ’ল অনগ্রসর মহিলাদের মধ্যে কল্যাণমূলক কাজ করা, তাদের কুসংস্কার–নিরক্ষর দূর করা, ধর্মচক্রের বন্দোবস্ত করা ও তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা৷ দেখা যায়, স্বামীর মৃত্যুর পর নারীরা আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হন৷ তাই তাঁরা যাতে স্বাধীনভাবে জীবিকার্জন করতে পারেন সে ধরণের সুযোগ তৈরী করতে হবে৷

কয়েকজন স্মরণীয়া মহিলা

কর্কটী রাক্ষসী

শিব তাঁর বৈদ্যক শাস্ত্র কাকে প্রথম শিখিয়েছিলেন তা’ এখন আর হলপ করে ৰলা যায় না৷ তবে যদ্দুর মনে হয়, তিনি প্রথমে তা’ শিখিয়েছিলেন কর্কটী রাক্ষসী নাম্নী জনৈকা অনার্য কন্যাকে৷ অনেকে সেকালে তাচ্ছিল্য করে অনার্যদের কখনো দানব, কখনো দৈত্য, কখনো রাক্ষস ইত্যাদিতে অভিহিত করত৷ সেকালের ভারতে কেবলমাত্র এই কর্কটী রাক্ষসীই বিসূচিকা (ওলাওঠা বা কলেরা) ও কর্কট রোগের (ক্যান্সার রোগ) চিকিৎসা করতে পারতেন৷ পরে ডগমা–প্রেষিত মানুষেরা তাঁকে হত্যা করে৷    (‘‘গণবতীসূত’’

    ‘শব্দ–চয়নিকা’, ১৬শ পর্ব)