অগ্ণিসংযোগের ষড়যন্ত্র প্রকৃতির বিরুদ্ধে নির্মম আঘাত!

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

প্রকৃতির বুকে অগ্ণিসংযোগ করে নির্বিচারে ধবংসযজ্ঞ চালিয়ে দুষৃকতকারীরা উদ্দাম উল্লাসে মত্ত, অথচ তারা বুঝতে অক্ষম যে, এই সর্বনাশা আগুনের গ্রাস থেকে তারাও রেহাই পাবে না৷ জীবজন্তু, পশুপাখি, প্রকৃতি ও মানবসমাজকে চরম দুর্যোগের মুখে ঠেলে দিয়ে তারা নিজেদের অস্তিত্বকেও বিপন্ন করে তুলছে৷

গত সন্ধ্যায়(২৯শে মার্চ’২৫), আনুমানিক ছয়টার সময়, দক্ষিণ আনন্দনগরে প্রস্তাবিত আনন্দমার্গ গুরুকুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কার্যালয় ’’চক্রধুরি’’র পূর্বদিকে সংলগ্ণ বনভূমিতে দুষৃকতকারীরা ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্ণিসংযোগ করে৷ গ্রীষ্মের শুষ্ক পরিবেশে মুহূর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, সৃষ্টি হয় চরম আতঙ্ক৷ সংবাদ পেয়ে বনবিভাগের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে৷

উল্লেখ্য, ঠিক পাশেই আমাদের পরিবেশ সংবর্ধন কানন, যেখানে কয়েক শতাধিক ময়ূরের আবাসভূমি ও বিচরণক্ষেত্র৷ পরমপুরুষের কৃপায় সেই আশঙ্কা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে৷ কিন্তু উদ্বেগের বিষয়, মাত্র দুই মাসের মধ্যে আনন্দনগর ডায়োসিসের চরগালি-পগরো মৌজায় একবার আর চিৎমু মৌজায় তিনবার ও বাগলতা মৌজায় একবার মোট পাঁচবার একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে৷ এই ধবংসাত্মক হীন কর্মকাণ্ড কি বন্ধ করা সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব, যদি সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়৷ প্রশাসন, পুলিশ ও বনবিভাগকে আরও সক্রিয় ও আন্তরিকভাবে এই অপরাধ রুখতে হবে আর প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে৷ বর্তমানে প্রতিটি গ্রামে সিভিক ভলান্টিয়ার্স রয়েছে, তাদেরও এই দায়িত্ব নিতে হবে৷

প্রতিটি পঞ্চায়েতে ডিআইবি District Intelligence Bureau)-র প্রতিনিধি পোষ্টিং আছে, তাদের নজরদারি বাড়াতে হবে৷ গ্রামে গ্রামে ভিআরপি Village Resource Person)-দের নিযুক্ত করা হয়েছে, তাদেরও সচেতনতা বাড়াতে হবে৷ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীরা কর্মসূত্রে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাদের মাধ্যমেও প্রতিরোধ গড়ে তোলা যেতে পারে৷

সর্র্বেপরি, সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে৷ স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রাদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে৷ গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে৷ এ এক গভীর সামাজিক সংকট৷ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই কেবল এই বিধবংসী প্রবণতা রোধ করা সম্ভব৷ প্রকৃতিকে রক্ষা করো, ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হোক