বস্তাপচা তত্ত্ব কথার কচকচানি ছেড়ে অর্থনীতিকে বাস্তবমুখী হতে হবে

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

দেশে ধনবৈষম্য বাড়ছে৷ ধবনির ভাণ্ডার যতপূর্ণ হচ্ছে গরীবের নাভিশ্বাস উঠছে৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অগ্ণিমূল্যে দু-মুঠো অন্নের ব্যবস্থা করতেই গরীবের দিন ফুরিয়ে যায়৷ জিডিপি জিডিপি চিৎকার করে সরকার ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছে৷ জিডিপি কখনই একটা দেশের আর্থিক স্বচ্ছলতার মাপকাঠি হতে পারে না৷ জিডিপির হিসাব হয় ধনকুবেরদের ক্রয় বিক্রয়ের হিসাব করে৷ যারা ১৪০ কোটি মানুষের দেশের কয়েক হাজার মাত্র৷ তাই এদের সম্পদ বৃদ্ধি আর্থিক অবস্থার সার্বিক চিত্র নয়৷ গরীব মধ্যবিত্তের হেঁসেলের খোঁজ নিলেই অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র দেখা যাবে৷ কিন্তু দেশের অর্থনীতির নিয়ামকদের দৃষ্টি অত নীচে নামে না৷

প্রাউটের মতে আর্থিক অবস্থার সার্বিক উন্নতি ও অগ্রগতির জন্যে চাই সুনির্দিষ্ট ও যথোপযুক্ত পরিকল্পনা ও কর্মসূচী৷ প্রাউট প্রবক্তা স্পষ্টই বলেছেন---‘‘আজ অর্থনীতি-বস্তাপচা তত্ত্ব কথার কচকচানি ছাড়া কিছুই নয়৷ একে অধিকতর বাস্তবমুখী করতে হবে৷ অর্থনীতি হবে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও প্রয়োগ ভৌমিক বিজ্ঞান৷’

সেইদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রাউট প্রবক্তা বিশ্বের ভাষা কৃষ্টি ও সংস্কৃতিক অভিব্যক্তি, প্রাকৃতিক ভৌগোলিক পার্থক্য অনুযায়ী প্রতিটি জনগোষ্ঠীর জন্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা দিয়েছেন৷

ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশের স্থানগত পার্থক্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ও স্থানীয় অঞ্চলের সম্ভাবনা ও চাহিদার কথা বিবেচনা করে প্রাউটের দৃষ্টিতে সারা ভারতকে ৪২টি স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে৷ আবার জমির উর্বরতা, শ্রমের যোগান ইত্যাদির পার্থক্যের জন্যে একই অঞ্চলের একাধিক অংশের জন্যে পৃথক পৃথক পরিকল্পনা রচনা করতে হবে৷ যেমন পূর্ববর্ধমান পশ্চিম বর্ধমান একই অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে হলেও দুই অংশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এক হবে না৷ পশ্চিম অংশ যেমন মাটির নীচের খনিজ সম্পদে ভরপুর আবার পূর্ব অংশ বিশ্বের উর্বরতম মাটি-যা কৃষিজাত পণ্যের উপযুক্ত৷ তাই দুই অংশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এক হতে পারে না৷ অর্থনীতিতে স্থানগত পার্থক্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়,যা এযাবৎ দেশের অর্থনীতির নিয়ামকরা বিবেচনাই করেননি৷ হয়তো তারা বৈচিত্র্যময় ভারতের ভূ-প্রকৃতির বৈচিত্র্যের কথা জানেননি না৷ জানলেও মাথায় রাখেন না৷ কারণ তাঁদের পরিকল্পনা তৈরী করতে হয় ধনকুবেরদের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে৷

তাই সবকা সাথ সবকা বিকাশের একটাই পথ বর্তমান অর্থনীতির খোল-নলচে পাল্টে প্রাউটের বিকেন্দ্রীত বাস্তবমুখী অর্থনৈতিক পরিকল্পনার রূপায়ন করে প্রতিটি মানুষের হাতে ক্রয়ক্ষমতা দিতে হবে৷