ভারতে দেশ সেবক নেই সবাই নেতা তাই জনমত কে ভয় পায়

লেখক
প্রভাত খাঁ

সংবিধান ও আইন মতাবেক যদি আদালতে কোন মামলা রুজু হয় সেই মামলার রায় দানের আগে কেউই এমন কি যারা শাসনে আছে তাদেরও অধিকার নেই সেই বিষয়ে কোন নোতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তার পরিবর্তন ঘটানো৷ সেটাই করে বসলো বর্ত্তমান কেন্দ্র সরকার৷ দেখা গেল বর্তমানে কেন্দ্রের দুর্বল ‘লেমডাক’ সরকাৱ এন.ডি.এ৷ বিজেপি ও দুটি বাহিরের দলকে সঙ্গে নিয়ে শাসনে এসেছে! সেই দল হঠাৎ সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলার শুনানীর অপেক্ষায় নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার অপেক্ষা না করে কমিশনার নিয়োগ করেন৷ কেন্দ্র সরকার একেবারে অসম্মানজনক ও অশোভন কাজ করে বসলেন! কেন এটা সরকার করলেন সচেতন প্রবীন নাগরিকদের এটা বড় প্রশ্ণ! এটার কঠোর সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস দলও৷ এটাতেই বোঝা যায় কি ভাবে দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধবংস করতে চাইছে সেই স্বার্থান্ধ কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তার দলবল! কেন্দ্র সরকার নিয়োগ করে বসেছেন একজন ব্যষ্টিকে, আলাপ ও আলোচনা করেই যাঁর নাম রাজীব কুমারকে যিনি ১৯৮৮ সালের ব্যাচের আই.এ.এস কেরালার৷ তিনি অবসর নেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ও সেই দায়িত্বও গ্রহণ করেছেন৷ সেই বৈঠকে বসেছিলেন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী৷ তিনি লিখিত আপত্তি ও জমা দেন৷ সেটা কর্ণপাত না করেই৷ এই বিষয়ে একটি মামলা আছে জানার পর সরকার সে সব অগ্রাহ্য করেই এই কাজ করে৷ এদিকে মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট এই মামলাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন মাননীয় বিচারপতিগণ, কিন্তু সরকার পক্ষ অগ্রাহ্য করেন সেই সংবাদ শুনেও৷

স্মরণে রাখা দরকার গত ২০২৩ সালে এই ব্যাপারে বিতর্ক সৃষ্টি হয়৷ তখন ২রা মার্চ ঐ বছরেই সুপ্রিমকোর্ট রায় দান করেন সে এই ব্যাপারে উল্লেখ করে বলা হয় যে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ এর দায়িত্ব সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়া হলে তা দেশের গণতন্ত্রের কাঠামো ও সুষ্টু নির্বাচন ব্যবস্থার পক্ষে ক্ষতিকারক হবে৷ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও আরো দুইজন কমিশনারকে বেছে নিতেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ঘঠিত সিলেকশন প্যানেল৷ একে নস্যাৎ করতে ওই বছরেই ডিসেম্বরে সংসদে সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোরে তিন কমিশনারের জন্য নিয়োগের আইন করেন হয় মোদী সরকার! নতুন আইন তৈরী করে প্যানেল থেকে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেন৷ আর সেই মোদীর মনোনীত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার একজনকে রাখা হয়৷ এই সময় বিরোধী দলগুলি তীব্র প্রতিবাদ করেন৷ বলেন এতে নিরপেক্ষতা লঙ্ঘিত হবে কারণ শাসক দলের সদস্য সংখ্যা সংখ্যাবেশী হয়ে যাবে৷

নতুন আইনে নির্বাচন কমিশনে শাসকদল প্রভাব বিস্তার করবে৷ ফলে নির্বাচন কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সাংবিধানিক সংস্থা শাসক দলের অনুগত হতে পারে৷ বা গণতন্ত্রকে মসীলিপ্ত করবে৷

 এই ধরণের নোংরা দলবাজি বন্ধ করতেই মহামান্য আদালতে মামলা রুজু করে একটি সংস্থা, নাম অ্যাসোসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফরম্‌ (এডিআর)৷ সেটা জেনে বুঝেই মোদি এই কাজ করে বসেন৷ কংগ্রেসের সভাপতি সেই সংবাদ আগেই মোদিকে বলেন সুপ্রিমকোর্টে এই নোতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগের ব্যাপারে মামলা রুজু আছে৷

এটি একটি মৌলিক বিষয়৷ এতে নাকগলাতে শাসকদল পারে কী?! ১৯৪৯ সালের জুন মাসে মাননীয় বি.আর. আম্বেদকর ভারতীয় গণতন্ত্র ও নির্বাচন কমিশনের কাজে সরকারী হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করেছিলেন৷ মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ ও বলেন এই কথা৷ কিন্তু মোদী সবই অগ্রাহ্য করে গায়ের জোরে৷ এই ঘটনা কোটি কোটি বোটারদের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে৷ ভারতের নির্বাচন প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলির উপর দেশের জনগণের আস্থাও কমে যাচ্ছে! তবে এই স্বৈরাচারীর দলতান্ত্রিক সরকার যেতে বসেছে৷ ভারতীয় গণতন্ত্র স্বৈরচারিতাকে বেশীদিন সহ্য করে না৷ ইন্দিরা গান্ধী তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত৷ তাই এই সরকারও যাবে৷ তবে যাওয়ার আগে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অনেক বড় ক্ষতি করে যাবে৷