মানুষের অর্বাচীন আচরণে বিপন্ন মৎসকুল

সংবাদ প্রতিবেদন

মানব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মৎসকুল৷ কারণ আর কিছুই নয়, মানুষের দুর্বুদ্ধি! নাকি বদবুদ্ধি? হাসপাতালের আবর্জনা নোংরা জল সবকিছু মিশছে নদীতে গিয়ে৷ নদীগুলোর জলকে দূষিত করছে এইসব আবর্জনা ও হাসপাতালের জীবাণুবাহিত জল৷ সরকার ও  হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কারো কোন মাথাব্যথা নেই এ নিয়ে৷ জলে তো শুধু মাছই থাকে না৷ মানুষও নানা কাজে ওই জল ব্যবহার করে আর সেই জল দূষিত করছে অজ্ঞ সাধারণ মানুষ নয়, মানুষকে সুস্থ রাখার দায়-দায়িত্ব যাদের তারাই৷

জল সঙ্কট যখন ঘনিয়ে আসছে, জলের জন্যে যখন হাহাকার উঠছে তখন সরকার জল সংরক্ষণ নিয়ে শোরগোল তুললেও সাধারণ মানুষের জল ব্যবহারের প্রধান উৎস নদীনালা, খাল-বিলের জলকে দূষণমুক্ত করার কোন পরিকল্পনা বা ভাবনাচিন্তা এখনও সরকারের মাথায় নেই৷

বিভিন্ন রকমের ঔষধ রোগ-জীবাণু মিশ্রিত নোংরা জল হাসপাতালগুলোর নর্দমা হয়ে পার্শ্ববর্তী নদীর জলে গিয়ে মিশছে৷ ওইসব নদী-খাল-বিলের জলে থাকা জলবাহিত মানব রোগের জীবাণু মাছের শরীরেও যাচ্ছে৷ ফলে মানুষের শরীরে যেসব রোগ দেখা যায় সেই সমস্ত রোগ এখন মাছের দেহেও বাসা বাঁধছে৷ এমনই একটি রিপোর্ট দিয়েছে সেন্ট্রাল ইনল্যাণ্ড ফিশারিস রিসার্চ ইনষ্টিটিউট৷ মাছেদের সাধারণতঃ যে সব রোগ হয় সেই সব রোগের চিকিংসা মৎস বিজ্ঞানীদের জানা আছে, কিন্তু মানব রোগে আক্রান্ত মাছের কোন চিকিৎসা পদ্ধতি এখনও মৎসবিজ্ঞানীদের হাতে আসে নি৷

এমতাবস্থায় মানুষের বিভিন্ন রোগের জন্য ব্যবহৃত ঔষধই মানব রোগে আক্রান্ত মাছের শরীরেও প্রয়োগ করা হচ্ছে৷ কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না৷ ফলে রোগাক্রান্ত মাছগুলিই বাজারে আসছে৷ নিরূপায় মৎসবিজ্ঞানীদের পরামর্শ রোগাক্রান্ত মাছ না খাওয়াই ভাল৷ কারণ মাছের দেহ থেকে মানব রোগ আবার মানব শরীরে প্রবেশ করবে যা যে কোন সময় মহামারীর রূপ ধারণ করতে পারে৷ কিন্তু রোগাক্রান্ত মাছ না খেতে বললেও সমস্যা হ’ল---মানুষ বুঝবে কেমন করে বাজারের কোন্ মাছটি রোগাক্রান্ত? অতএব বুদ্ধিমানের কাজ হবে মাছ না খাওয়া৷

প্রাউট-প্রবক্তা শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার  বহু আগেই সাবধান করে বলেছেন---‘এমন দিন আসবে যখন মানুষ জল খেয়ে মরবে, না খেয়েও মরবে’৷ সেই দিন কি ঘনিয়ে আসছে? যদি প্রশাসন ও বিদগ্দ মানুষ এ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা না করে,  দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, জলকে দূষণমুক্ত রাখার ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বিপর্যয় আসন্ন৷