ভারতীয় ফুটবলের গতিহীনতা যেন স্থবির হয়ে আছে৷ বহুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে এই টিমটাকে ঠিক ভাবে তালিম দিলে আগামী দিনে ভারতীয় দল বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে৷ বাইচুং ভুটিয়া যখন ভারতীয় ফুটবলে সাড়া জাগানো ফুটবল উপহার দিচ্ছেন---যে দলেই থাকছেন তার সঙ্গেই ফারাক হয়ে যাচ্ছে বিপক্ষ দলের তখন অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন--- বাইচুংয়ের কাঁধে ভর করে ভারত বিশ্বকাপে খেলার ক্ষমতা রাখে৷ এরপর দিন গেল, বছর গেল, বাইচুং বিদেশে গেলেন, আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রতিষ্ঠিত দলে যোগ দিয়ে ভাল ট্রেনিং করলেন, অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ফিরে এলেন দেশে৷ ততদিন আরও কিছু ভাল ফুটবলার উঠে এলেন কিন্তু বিশ্ব ফুটবলে ভারত তেমন ভাবে ছাপ রাখতে পেরেছে কি? র্যাঙ্কিংয়ে কোন কোন সময় দু-এক ধাপ এগিয়ে গেলেই আকাশ কুমসু ভাবনার প্রতিফলন খবরের কাগজের পাতায়, স্পোর্টস ম্যাগাজিনের বিশেষ জায়গায়৷
এখন সুনীল ছেত্রীর নেতৃত্বে এক ঝাঁক তরুণ খেলোয়াড়৷ এঁদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল খেলছেন৷ গত বছর ভারতে যুব বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হয়ে গেল৷ সেখানে ভারতীয় ব্রিগেড অংশ নিয়ে ভাল খেলেছে বলে অনেক ফুটবল বোদ্ধা মন্তব্য করেছিলেন৷ এদিকে আই.পি.এল. নামক প্রতিযোগিতাকে ঘিরে শুরু হয়েছে ফুটবলের দারুণ উন্মাদনা৷ জানা গেছে এই আ.পি.এল থেকে ভারতীয় ফুটবলাররা অনেক কিছু শিখতে পারবে---অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবে৷ অর্থাৎ ভারতীয় ফুটবলের উন্নতিতে এই আই.পি.এল যথেষ্ট সহায়তা করবে৷
এটা ঠিক এই ইণ্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে অনেক বিদেশী ফুটবলার, কোচ অংশ নেওয়ায় জাঁকজমকপূর্ণ ভাল ফুটবল উপহার পাওয়া যাবে৷ মাঠমুখো হবে অনেক ফুটবল অনুরাগী৷ ফুটবলে অনেক খরচ করবে আমাদের দেশের দলগুলি৷ এতে খেলোয়াড়দের আয় বাড়বে৷ তাদের আর্থিক অবস্থা উন্নতি হলে খোলা মনে ভাল ফুটবলার হওয়ার দিকে এগিয়ে যেতে পারবে৷ এই রকম অনেক ইতিবাচক ব্যাপার ঘটে গেছে বিগত কয়েক বছরে৷ অনেক ভাল ভাল কথা লেখা হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়৷ অনেক ফুটবল বোদ্ধা স্বপ্ণ দেখেছিলেন ভারত বিশ্বমানের ফুটবল উপহার দেবে৷ বিশ্ব ফুটবল মানচিত্রে ভারত একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় ফটবল খেলিয়ে দেশ হিসেবে চিহ্ণিত হবে৷
এবার বাস্তব চিত্রটা দেখা যাক৷ বাইচুং ভুটিয়া, সুনীল ছেত্রী, প্রীতম কোটাল, জে জে লালপেগলুয়া, সন্দেহ ঝিংগন, আনোয়ার আলির মত হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র কুশলী খেলোয়াড় ভারতের ঝুলিতে বিভিন্ন সময়ে উঠে এসেছেন৷ কিন্তু এঁরা ব্যষ্টিগতভাবে নিজেদেরকে তৈরী করেছেন, প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে উঠে এসেছেন ভাল খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন৷ মনে রাখতে হবে দলগতভাবে ভাল না খেলতে পারলে আজকের বিশ্ব ফুটবলে বিশেষ স্থান পাওয়া যাবে না৷ এশিয়ার মধ্যেও একটা বিশেষ স্থানে পৌঁছতে পারেনি ভারতীয় ফুটবল দল৷ অথচ যে সকল প্রথিতযশা বিদেশী খেলোয়াড় ভারতে এসেছেন তাঁরা প্রায় একবাাক্য ভারতের ফুটবলের উন্মাদনা দেখে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছেন এই জত্রেন্য যে---যে দেশে এত ফুটবলে প্রতি উৎসাহ, এত মাঠ এত দক্ষ খেলোয়াড় সেই দেশ বিশ্ব ফুটবল মানচিত্রে তেমন কোন জায়গা করে নিতে পারেনি! তবু আশা---নতুন পরিকাঠামোয় ভারত অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ব ফুটবলে বিশেষ স্থান দখল করবে৷