এক বালককে তার মাস্টার মশাই শিখিয়েছিলেন বড়দের প্রণাম করতে হয়৷ সরলমতি বালক একদিন মায়ের সঙ্গে নদীতে স্নান করতে গিয়ে দেখে নদীর তীরে একটি বড় কুমির শুয়ে আছে৷ এত বড় কুমির দেখে বালকটি বললে---‘কুমির ভাই প্রণাম৷’
কুমির---‘তুমি আমায় প্রণাম করলে কেন? ’
বালকটি উত্তর দিলো---‘তুমি তো আমার চেয়ে অনেক বড় তাই তোমায় প্রণাম করলুম’৷
কুমির---‘দেখো আমার চেয়ে নদীটা অনেক বড়৷ এই নদীতে আমার মত আরও অনেক কুমির আছে, তুমি এই নদীটাকে প্রণাম করো’৷
বালক কুমিরের কথামতো নদীকে প্রণাম করলো৷
তখন নদী বললো---দেখো বালক আমার চেয়ে বড় মহাসাগর৷ সব নদী ওই সাগরে গিয়ে মিশেছে৷
বালক এবার সাগরকে প্রণাম করে৷
তখন সাগর বলে আমার চেয়েও বড় এই ধরিত্রী৷ এই ধরিত্রীর বুক দিয়ে আমার মত অনেক সাগর বয়ে চলেছে৷
বালক এবার সাগরের কথামতো ধরিত্রীকে প্রণাম করে৷
ধরিত্রী বলল দেখো বালক আমার চেয়ে বড় এই মহাকাশ, আমার মত লক্ষ লক্ষ গ্রহ নক্ষত্র এই মহাকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷
বালক মহাকাশকে প্রণাম করলো৷
মহাকাশ বলল---‘দেখো বালক এই মহাবিশ্বের যিনি স্রষ্টা, সেই পুরুষোত্তম রাম সব থেকে বড়, তার চেয়ে বড় আর কেউ নেই৷
বালক তখন পরমাত্মা পরম পুরুষ পুরুষোত্তম রাম কে প্রণাম করে৷
এবার পুরুষোত্তম রাম বালকের সম্মুখে এসে দাঁড়ালেন৷
বালক কে বললেন তুমি আমায় কেন প্রণাম করলে?
বালক উত্তর দিল তুমি এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা, এই বিশ্ব সংসার তোমারই ইচ্ছায় চলে৷ তোমার চেয়েও বড় কেউ নেই৷ তাই আমি তোমায় প্রনাম করলুম৷
পুরুষোত্তম রাম বললেন--- ‘আমার চেয়েও বড় আছে’
বালক---‘কোথায়’
পুরুষোত্তম রাম ---‘কেন, যেথায় আমি থাকি৷ যেখানে আমি থাকি সেটা যদি আমার চেয়ে বড় না হয় আমি থাকবো কি করে?’
বালক--- ‘তুমি কোথায় থাকো?’
পুরুষোত্তম রাম বললেন---’ আমি থাকি তোমার হৃদয়ে৷ শুধু তোমার হৃদয়েই নয়, সকল মানব হৃদয়েই আমি থাকি৷ তবে সে হৃদয় যেন সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িকতার গণ্ডিবদ্ধ না হয়৷ যে হৃদয় স্বার্থ লোভ আর বিদ্বেষ বিষে ভরা সেখানে আমি থাকতে পারি না৷
পুরুষোত্তম রামের আবাস কোন স্বর্ণ ইটের মন্দির নয়৷ তিনি থাকেন নির্মল স্বচ্ছ উদার হৃদয়ের মানুষের মনেই৷ তিনি কোন সংকীর্ণ গণ্ডিবদ্ধ সম্প্রদায়ের নন৷
তিনি অপার স্নেহ মমতা ভালবাসা দিয়ে তাঁর সৃষ্টিকে মানুষ পশু-পাখী তরুলতা সর্ব অস্তিত্বকে পালন করে চলেছেন৷ তার জন্য তাঁর কোন ত্রিশূল তরোয়ালের প্রয়োজন হয় না৷
শৈব তান্ত্রিক বাঙলায় এই রাম চিৎকার কোন ধর্ম নয়, ধর্মীয় উৎসব নয়৷ ধর্মের আড়ালে বাঙলার সম্পদ লুণ্ঠন ও বাঙালী জনগোষ্ঠীকে ধবংস করার হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত৷ যে চক্রান্তের শুরু স্বাধীনতার পর মুহূর্ত্ত থেকেই৷ বর্তমান উপধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক শাসকের আমলে তা আরও বেড়েছে৷ পৌরাণিক কাহিনীর চরিত্র রামের সঙ্গে হনুমানকে হিরো বানিয়ে বিহার উত্তরপ্রদেশের মানুষের সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক চেতনাকে জড়ত্বে পর্যবশিত করেছে৷ শেষ চেষ্টা বাঙলার উপর৷ বাঙলার লোহা কয়লা প্রভৃতির সঙ্গে নতুন খনিজ সম্পদ তেল৷ বাঙলার সম্পদ লুণ্ঠন করেই দিল্লি গুজরাটের পেট চলে৷ বাঙ্গালীকে নিকৃষ্টতম ক্রিকেট জুয়ায় মাতিয়ে রেখে, ২৬ হাজার ছেলেকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পানে ঠেলে দিয়ে ন্যাহ্য প্রাপ্য না দিয়ে বাঙলায় এক সামাজিক রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরী করে জীবন দায়ী ওষুধের দাম গুলো বাড়িয়ে দিয়েছে৷ কারণ দিল্লি জানে এখনো দিল্লিকে কঠিন বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয় একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই৷ তাই বাঙালিকে আইপিএল৷ রাম হনুমানে মাতিয়ে রেখে ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক সংকট তৈরি করে বাঙলাকে লুণ্ঠন করাই দিল্লির হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী শাসকের লক্ষ্য৷ তবে এই বাঙলা থেকেই বিজেপির বিনাশের শুরু হবে৷ কিছু বাঙালী শৈব তান্ত্রিক বাঙলায় রাম চিৎকার করছে৷ কিন্তু বাঙলার সব বাঙালী বাঙালী নয়৷ বর্গী রক্তজাত অনেক বাঙালী বাঙলায় আছে৷
- Log in to post comments