আমতায় অখণ্ড কীর্ত্তন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ১৪ই জুলাই আমতা আনন্দমার্গ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী লক্ষ্মীকান্ত হাজরার বাসগৃহে বহু ভক্ত সমাগমে মনোরম আধ্যাত্মিক পরিবেশে তিন ঘণ্টা ব্যাপী অখণ্ড কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷

আনন্দমার্গ দর্শনের প্রবক্তা শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তি কীর্ত্তন প্রসঙ্গে বলেছেন---পরমাত্মা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র রূপে বিদ্যমান৷ ভক্তের মধুর ও কোমল হৃদয়ে তাঁর আবাস---তাঁর স্থান বৈকুণ্ঠে নয়৷ তিনি বৈকুণ্ঠে বিরাজ করেন না, আবার তিনি সুদূর আকাশের নক্ষত্রও নন৷ তিনি শুধু তোমারই৷ তিনি বলেছেন,---‘নাহং তিষ্ঠামি বৈকুণ্ঠে যোগীনাং হৃদয়ে ন চ’৷ অর্থাৎ যোগীদের স্তম্ভিত নিরূদ্ধ হৃদয়ে থাকি না৷ তাদের হৃদয় কঠোর, শুষ্ক৷ এত শুষ্ক যেন মরুভূমি৷ তাই আমি সেখানে তো থাকতে পারি না৷ আমি চাই সরস ভূমি---উর্বর ক্ষেত্র, আমি চাই দিব্য ভাবনায় পরিপূর্ণ মর্মভূমি৷ আমি সেই মনুষ্য হৃদয় চাই যা আনন্দে উদ্বেল হয় দুঃখ কষ্টে বেদনার্ত হয়৷ আমি সেই স্বাভাবিক মানুষকেই চাই৷ ‘মদভক্তা যত্র গায়ন্তি, তত্র তিষ্ঠামি নারদঃ৷’ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রাণপুরুষ তিনি কোথায় থাকেন? তিনিই বলেছেন, যখন যেখানে আমার ভক্তরা কীর্ত্তন করেন আমি সেখানে চলে যাই, তাদের সঙ্গেই থাকি৷ পরমপুুরুষের সেটাই হলো প্রকৃত নিবাসস্থল৷

সত্যই ওই দিন প্রায় তিনশত ভক্ত সমাগমে ‘বাবানাম কেবলম’ মহানাম মন্ত্রে মুখরিত শ্রীহাজরার বাসগৃহ পরমপুরুষের নিবাসস্থল হয়ে উঠেছিল৷ কীর্ত্তনের পূর্বে প্রভাতসঙ্গীত পরিবেশন করেন আচার্য গুরুদত্তানন্দ অবধূত ও অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ৷ সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে কীর্ত্তন শুরু হয়, ১১টা ৩০ মিনিটে কীর্ত্তন সমাপ্তির পর সাধনা শেষে স্বাধ্যায় পাঠ করেন হাওড়া জেলার ভুক্তিপ্রধান সুব্রত সাহা, ‘বাবা নাম কেবলম্’ মহানাম মন্ত্রের তাৎপর্য ব্যখ্যা করে বক্তব্য রাখেন আচার্য গুরুদত্তানন্দ অবধূত৷ আচার্য অভিব্রতানন্দ অবধূত তাঁর বক্তব্যে আনন্দমার্গ দর্শন ও আনন্দমার্গের সুমহান আদর্শের কথা তুলে ধরেন৷ আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত বর্তমান সমস্যা জর্জরিত সমাজে সভ্যতার সংকট থেকে মুক্তি পেতে বিজ্ঞানের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক অনুশীলন ও চর্চার প্রয়োজনের কথা বলেন৷ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন হুগলী ডায়োসিসের সচিব আচার্য সুবিকাশানন্দ অবধূত৷

মনোরম নান্দনিক পরিবেশে অনুষ্ঠান শেষে ভক্ত ও অতিথিবৃন্দের আপ্যায়নের কোনও ত্রুটি রাখেননি সমগ্র অনুষ্ঠানের আয়োজক শ্রী লক্ষ্মীকান্ত হাজরা ও তাঁর স্ত্রী সুজাতা হাজরা৷ মার্গী ভাই-বোন ছাড়াও বহু সাধারণ মানুষ এই কীর্ত্তনে অংশগ্রহণ করেন৷