মুর্শিদাবাদের ঘটনায় ক্ষুদ্ধ প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রীপ্রভাত খাঁ রাজনীতির কারবারিদের অপরাধীর কাঠগোড়ায় তোলেন৷ প্রশাসনিক ব্যর্থতার কথাও তিনি বলেন৷ তিনি বলেন কেন্দ্রে বিজেপি সরকার কায়েম হবার পর থেকেই ধর্মমতকে হাতিয়ার করে বাঙলা দখলে তৎপর হয়েছে৷ কিন্তু রাজনৈতিক কৌশলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পেরে উঠছে না বিজেপি৷ ২০২১ ও ২০২৪ এর পরাজয়ের গ্লাণি ভুলতে পারছে না বিজেপি৷ তাই ২০২৬-এ বাঙলা দখলের জন্যে উন্মাদ হয়ে উঠেছে বিজেপি৷ নেতাদের কথাবার্তা অগণতান্ত্রিক সুলভ৷
মুর্শিদাবাদের মর্মান্তিক ঘটনায় সাম্প্রদায়িকতার রং লাগলেও পশ্চাতে আছে নোংরা রাজনীতির খেলা৷ নন্দীগ্রামে দেখেছিলাম চটি পরা পুলিশ, এখানেও চটি পরা বিএসএফ ও বহিরাগতের অনুপ্রবেশের খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে৷ এর থেকে একটা সত্য উঠে আসছে ঘটনার পিছনে সাম্প্রদায়িক ভাবাবেগ নয়, সংকীর্ণ রাজনৈতিক মতলব রয়েছে৷ দেশভাগের বলি বাঙালী সেদিনও উত্তর-পশ্চিম ভারতীয় ক্লেদাক্ত রাজনীতির শিকার হয়েছিল৷ আজও কিছু অপগণ্ড বাঙালীর হাত ধরে উত্তর পশ্চিমের ক্লেদাক্ত রাজনীতি বাঙলায় অনুপ্রবেশ করছে৷ তিনি বলেন শ্যামাপ্রসাদের মত পণ্ডিত ব্যষ্টিও এই ক্লেদাক্ত রাজনীতি করতে গিয়ে সেই ক্লেদাক্ত রাজনীতিরই বলি হন৷ এই ক্লেদাক্ত রাজনীতির মধ্যেই নিহিত আছে সাম্প্রদায়িকতার বিষাক্ত বীজ৷
স্বাধীনতার অনেক আগে থেকেই বাঙলার খনিজ বনজ, কৃষিজ, জলজ সম্পদের উপর লোলুপ দৃষ্টি দেশীয় পুঁজিপতি ও সাম্রাজ্যবাদী শাসকের৷ তাই বাঙলার ভূ-খণ্ডকে টুকরো টুকরো করে বাঙালী জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে বাঙলাকে অবাধ লুণ্ন্ঠনের সূচনা করে যায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ৷ সেই পথই অনুসরণ করছে নেহেরু থেকে নরেন মোদি দিল্লির প্রতিটি সরকার৷ মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক ঘটনাও আলাদা কিছু নয়৷ যে ক্লেদাক্ত রাজনীতি স্বাধীনতার আগে জিন্হা গান্ধী, নেহেরু, পটেলের হাত ধরে শুরু হয়েছে৷ মুর্শীদাবাদের ঘটনা তারই পরিণতি৷ গণতান্ত্রিক পথে বাঙলা দখলে ব্যর্থ হয়ে সংকীর্ণ ধর্মমতকে আশ্রয় করে ক্লেদাক্ত রাজনীতির খেলায় নেমেছে কিছু উত্তর পশ্চিম ভারতীয় নেতা৷ প্রায় দু’বছর ধরে দাঙ্গায় জরাজীর্ণ মনিপুর নিয়ে যাদের মুখে একটা বুলি ফুটেনে তারাই মুর্শিদাবাদ নিয়ে ফুটানি মারছে৷
বাঙালী জাতির কথা ভাবলেও কষ্ট হয়৷ ১৯৪৬-এর ক্ষত এখনও দগদগ করছে, তবুও বাঙালীর শিক্ষা হচ্ছে না৷ রাজনীতির কারবারীদের উস্কানিতে আত্মঘাতী সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে বার বার সংকীর্ণ ধর্মমতের ভাবাবেগে৷