১৬৭৯ খ্রীষ্টাব্দে ইংরেজদের বানিজ্য জাহাজ ভাগীরথীর ওপর দিয়ে প্রথম হুগলীতে প্রবেশ করে৷ তার আগে সমস্ত জাহাজ বালেশ্বর অবধিই আসতো৷ জাহাজটির নাম ছিল ‘ফ্যাকন’৷ জাহাজের প্রধান অধ্যক্ষ ক্যাপ্ঢেন স্টাফোর্ড৷
সেই সময় জলদস্যুদের উৎপাত বন্ধ করবার জন্য নবাব শায়েস্তা খাঁ একটি কেল্লা তৈরী করেছিলেন৷ কেল্লাটি মাটির তৈরী৷ তাই তার নাম হয়েছিল মেটিয়াবুরুজ৷ মেটিয়া বা মাটিয়া (মাটি) আর বুরুজ মানে কেল্লা৷ মাটির কেল্লা তাই মেটিয়াবুরুজ৷
ফ্যাকন জাহাজটি মেটিয়াবুরুজে এসেই নোঙর করেন৷ এখানে জাহাজ নোঙর করার ভাল ব্যবস্থা ছিল৷ স্ট্যাফোর্ড এ দেশের ভাষা একদমই জানতেন না৷ কিন্তু ক্যাপটেন শুণেছিলেন গোবিন্দপুরের শেঠ বসাকেরা কিছু কিছু ইংরেজী জানেন৷ লোক মারফৎ ক্যাপ্ঢেন স্টাফোর্ড শেঠ বসাকদের কাছে একজন ‘দুবাস’ চেয়ে পাঠালেন৷
সাহেবের আসলে প্রয়োজন ছিল একজন দ্বিভাষীর৷ দ্বিভাষী সাহেবের মুখে উচ্চারিত হলো দুবাস৷ এদিকে ‘দুবাস’ শব্দের অর্থ বুঝতে না পেরে শেঠ বসাকরা অনুমান করলেন সাহেব বোধহয় একজন ধোবা চাইছেন৷ তখন রতন সরকার নামে একজন ধোবাকে তাঁরা সাহেবের জাহাজে পাঠিয়ে দিলেন৷ সৌভাগ্যবশতঃ রতন ধোবা একটু আধটু ইংরেজী জানতো৷ ভালো পোষাক পরিচ্ছদ পরে কিছু উপঢৌকন নিয়ে রতন গেলো সাহেবের কাছে৷ রতনের সাথে ইংরেজীতে কথা বলে সাহেব মোটামুটি সন্তুষ্ট হলেন৷ আর রতনও সেইসঙ্গে ইংরেজের প্রথম দ্বিভাষীর পদ লাভ করলো৷
অনেকের ধারণা, কোলকাতার ‘রতন সরকার গার্ডেন ষ্ট্রীট’ রাস্তাটি রতনের স্মৃতি রক্ষার্থেই তৈরী হয়েছে৷
- Log in to post comments