সংবাদ দর্পণ

নৈনিতালের জঙ্গল এলাকায় দাবানলের আগুন

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের জঙ্গল এলাকায় দাবানলের সৃষ্টি হয়েছে৷ ধীরে ধীরে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছে লোকালয়েও৷ গত শুক্রবার উত্তরাখণ্ড হাই কোর্ট সংলগ্ণ এলাকা পর্যন্ত জঙ্গলের আগুন পৌঁছে গিয়েছে৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনা৷ হেলিকপ্ঢারের মাধ্যমে জল ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে৷ নৈনিতালের জঙ্গলে আগুন লাগার খবর আগেই মিলেছিল৷ গত শুক্রবার নতুন করে জঙ্গলের ৩১টি জায়গায় আগুন লাগানোর খবর পায় পুলিশ৷ গ্রামবাসীরাই জঙ্গলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ৷ এর ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় নৈনিতালে ৩৩.৩৪ একর জঙ্গল এলাকা ধবংস হয়েছে৷ রুদ্রপ্রয়াগ থেকে জঙ্গলে আগুন লাগানোর অভিযোগে তিন জনকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ নৈনিতালে দাবানল পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিংহ ধামী৷ তিনি এলাকার বাসিন্দাদের সাবধানে থাকার অনুরোধ করেছেন৷ সেই সঙ্গে রাজ্যের সব দফতরকে একত্রিত হয়ে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ গত শুক্রবার রাতে নৈনিতালের জঙ্গলের আগুন উত্তরাখণ্ড হাই কোর্টের কাছাকাছি পৌঁছে যায়৷ ওই এলাকার বাসিন্দারা আগুনের লেলিহান শিখাও দেখতে পান৷ এর ফলে এলাকায় যান চলাচল বিঘ্নিত হয়৷ রাতেই ডাকা হয় সেনাবাহিনীকে৷ বন দফতরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেনা জওয়ানেরাও আগুন নেভানোর কাজ সাহায্য করেছেন সারা রাত৷ আগুন শুক্রবার লোকালয়ের এতটাই কাছাকাছি চলে এসেছিল যে, নৈনি হ্রদে বোটিং সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ৷ তবে এখনও পর্যন্ত লোকালয়ের কোনও অংশে ক্ষয়ক্ষতির কথা জানা যায়নি৷ উত্তরাখণ্ড বন দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের নভেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের জঙ্গল এলাকায় মোট ৫৭৫টি দাবানলের ঘটনা ঘটেছে৷ প্রতিটিই মনুষ্যসৃষ্ট৷ এর ফলে বন দফতরের ৬৮৯.৮৯ হেক্টর জমি নষ্ট হয়েছে৷ রাজ্যের ক্ষতি হয়েছে ১৪ লক্ষ টাকার বেশি৷

বেঙ্গালুরুতে জলের হাহাকার

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

অনেক দিন ধরেই জলসঙ্কটে ভুগছে কর্নাটকের বেশিরভাগ অঞ্চল৷ তার মধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল বেঙ্গালুরুতে৷ একটু জলের জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছে, এমনও দৃশ্য দেখা গিয়েছে৷ বিষয়টি আপাতত সামাল দেওয়া গেলেও আগামী দিনে কর্নাটকের ছবিটা যে খুব একটা স্বস্তির হবে না, সেই ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্রীয় জল কমিশন৷

বেঙ্গালুরুতে যে দৃশ্য দেখা গিয়েছিল মাসখানেক আগে, এ বার সেই একই দৃশ্য দেখা যেতে পারে দক্ষিণ ভারতের আরও চার রাজ্যে৷ কর্নাটকের পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, কেরল এবং তামিলনাড়ুতে জলসঙ্কট দেখা দিতে পারে৷ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় জল কমিশন একটি তথ্য প্রকাশ করেছে৷ সেখানে বলা হয়েছে, এই পাঁচ রাজ্যের জলাধারগুলির মোট ধারণক্ষমতার ৮৩ শতাংশ জল ফুরিয়ে গিয়েছে৷ গত বছরের তুলনায় জলস্তর অনেকটাই নেমেছে৷ ফলে এই রাজ্যগুলিতে আগামী দিনে জলসঙ্কটের একটা সম্ভাবনা তৈরির আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে৷

জল কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত বছর গড় স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টির পরিমাণ কম ছিল গোটা দেশে৷ তার জেরে দেশের জলাধারগুলিতে জলস্তর নামতে শুরু করেছে৷ একেই পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে জলাধারগুলিতে জলের সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়ছে না, তার সঙ্গে সেই জল ব্যবহারের পরিমাণ বেড়েছে৷ স্বাভাবিক ভাবেই জলাধারগুলির সঞ্চয় প্রায় তলানির দিকে যাচ্ছে৷ বৃহস্পতিবার জল কমিশন দক্ষিণের পাঁচ রাজ্যের জলাধারের যে তথ্য প্রকাশ করেছে, সেখানে বলা হয়েছে, ৫৩০৩ কোটি কিউবিক মিটার জল ছিল ওই রাজ্যের জলাধারগুলিতে, বর্তমানে রয়েছে ৮৮০ কোটি কিউবিক মিটার৷ এই পরিস্থিতিতে যে ভয়ানক সঙ্কটের মুখে দাঁড় করাবে পাঁচ রাজ্যকে, সেই আশঙ্কাই প্রকাশ করেছেন জল কমিশনের ওই আধিকারিক৷

তিনি আরও জানিয়েছেন, এই সময়ে জলস্তর কমে যাওয়াটা আরও বেশি আশঙ্কার৷ গত বছরের তুলনায় এ বছর এই সময়ে জলস্তর দ্রুত নামছে৷ এখনও বর্ষা আসতে আরও এক মাসের বেশি সময় বাকি৷ ফলে পরিস্থিতি যে খুব একটা স্বস্তির নয়, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি৷ তবে তার মধ্যেও আশার আলো দেখিয়েছে মৌসম ভবন৷ এ বছর গড় স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টি বেশি হতে পারে৷ ফলে সেই সময় দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে জলস্তর বাড়তে পারে বলেই আশা করা হচ্ছে৷

২০ লক্ষ গাছের চারা পুঁতে আবার নতুনভাবে অরণ্য তৈরি করেছেন ব্রাজিলের এক দম্পতি

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

প্রায় ৩২ কোটি একর জমি জুড়ে জঙ্গল৷ আয়তনে দক্ষিণ আফ্রিকার সমতুল্য৷ নববইয়ের দশকে গাছ কাটার কারণে ব্রাজিলের একাংশের ঘন জঙ্গলের অস্তিত্ব পুরোপুরি মুছে যায়৷ দুই দশক জুড়ে সেই এলাকায় ২০ লক্ষ গাছের চারা পুঁতে আবার নতুন ভাবে অরণ্য তৈরি করেন ব্রাজিলের এক দম্পতি৷ ১৯৪৪ সালে ব্রাজিলে জন্ম সেবাস্টিয়াও রিবেইরো সালগাদোর৷ সে দেশের খ্যাতনামী চিত্রসাংবাদিক তিনি৷ পেশার প্রয়োজনে বিশ্বের ১২০টি দেশ ঘুরে ফেলেছেন তিনি৷ তাঁর কলমে লেখা রয়েছে একাধিক বই৷ ছবি তোলার পেশাই তাঁর জীবনকে অন্য মোড়ে দাঁড় করায়৷ ২০১৫ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেবাস্টিয়াও জানিয়েছিলেন, ১৯৯৪ সালে মধ্য আফ্রিকার রোয়ান্ডায় যুদ্ধ চলাকালীন সেই বিষয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করতে গিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু ঘটনার ভয়াবহতা সহ্য করতে পারেননি৷ যুদ্ধের ভয়াবহতায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন সেবাস্টিয়াও৷ কাজ থেকে কিছু দিনের জন্য বিরতি নিয়ে ব্রাজিলে নিজের বাড়িতে চলে যান তিনি৷ বেশ কয়েক বছর পর বাড়ি ফিরে চমকে ওঠেন চিত্রসাংবাদিক৷ সেবাস্টিয়াও সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ব্রাজিলের যে এলাকায় তিনি থাকতেন সেখানে বিশাল অরণ্য ছিল৷ কিন্তু ১৯৯৪ সালে সেখানে গিয়ে তিনি দেখেছিলেন, পুরো এলাকা খাঁ খাঁ করছে৷ অরণ্য কোথায়! একটি গাছও নেই সেখানে৷ সেবাস্টিয়াও বলেছিলেন, ‘‘আমি যেমন ভিতর থেকে মরে গিয়েছিলাম, জায়গাটি দেখেও মৃত বলে মনে হয়েছিল৷ আমার স্ত্রীকে সেই কথা জানানোয় ও বলেছিল, আবার নতুন করে সেখানে প্রাণ সঞ্চার করা হবে৷’’ ১৯৬৭ সালে লেইলা ওয়ানিক সালগাদোকে বিয়ে করেছিলেন সেবাস্টিয়াও৷ তথ্যচিত্রনির্মাতার পাশাপাশি লেইলা এক জন পরিবেশবিদও৷ ব্রাজিলের সেই শূন্য এলাকায় আবার অরণ্য তৈরি করতে উদ্যোগী হন তিনি৷ যেমন ভাবা, তেমন কাজ৷ ব্রাজিলে নিজস্ব সংস্থা গড়ে তোলেন সেবাস্টিয়াও এবং লেইলা৷ সেই সংস্থার তরফে চার লক্ষ চারাগাছ পোঁতা হয়৷ ৩২ কোটি একর জমি জুড়ে গাছের চারা পুঁততে শুরু করেন দম্পতি৷ স্থানীয় এলাকায় যে গাছগুলি বেড়ে ওঠে সেই গাছের বীজ পোঁতার সিদ্ধান্ত নেন সেবাস্টিয়াও এবং লেইলা৷ সাক্ষাৎকারে সেবাস্টিয়াও বলেছিলেন, ‘‘ঘন জঙ্গল তৈরির পরিকল্পনা করলে শুধু গাছ লাগালেই হয় না৷ এলাকাটি এমন ভাবে তৈরি করতে হয় যে আশপাশ থেকে পোকামাকড়, সাপখোপ আসতে পারে৷ বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তুও যেন আশ্রয় নিতে পারে৷ তা হলেই সামগ্রিক ভাবে একটি অরণ্য বেড়ে উঠতে পারে৷’’ পরিকল্পনা মতো এগিয়ে যেতে থাকেন সালগাদো দম্পতি৷ দুই দশক ধরে গাছের চারা পুঁতে ওই এলাকায় সত্যিই জঙ্গল তৈরি করে ফেলেন তাঁরা৷ বর্তমানে সালগাদো দম্পতি নির্মিত ব্রাজিলের ওই অরণ্যে রয়েছে ২০ লক্ষেরও বেশি মোট ২৯৩টি প্রজাতির গাছ৷ জঙ্গলে ১৭২টি প্রজাতির পাখির পাশাপাশি ৩৩টি প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৫টি প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১৫টি প্রজাতির উভচর প্রাণী নিয়ে আস্ত একটি বাস্তুতন্ত্র গড়ে ফেলেছেন তাঁরা৷ পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি বছর এক কোটি একর জমিতে তৈরি হওয়া জঙ্গল কেটে ফেলা হয়৷ সেবাস্টিয়াও যখন বাড়ি গিয়েছিলেন তখন এলাকার মাত্র ০.৫ শতাংশ জমিতে গাছ ছিল৷ বর্তমানে সেখানে গড়ে উঠেছে ঘন জঙ্গল৷ সেবাস্টিয়াও বলেছিলেন, ‘‘পৃথিবীতে গাছই একমাত্র জিনিস যা কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে অক্সিজেন তৈরি করতে পারে৷ প্রকৃতিই আমাদের কাছে বিশ্বসমান৷ আমরা যদি নিজেদের সাধ্যমতো পৃথিবীকে কিছু না দিতে পারি তা হলে আমাদেরই ভুগতে হবে৷’’

রক্ষকই ভক্ষক---মনিপুর পুলিশের নক্কারজনক ভূমিকা

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

মনিপুরে দীর্ঘদিন ধরে দুই সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ চলছে৷ গত বছর ৩রা মে মেইতেই সম্প্রদায়ের এক হিংস্র জমায়েত থেকে বাঁচতে কুকী সম্প্রদায়ের দুই মহিলা পুলিশের কাছে আশ্রয় নেয়৷ কিন্তু পুলিশি তাদের ওই হিংস্র জনতার সামনে ছেড়ে দেয়৷ সিবিআই তদন্তে এমনটাই উঠে এসেছে৷

গুয়াহাটিতে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে ওই ঘটনার চার্জসিট জমা দিয়েছে সিবিআই৷ চার্জসিটে বলা হয়েছে হিংস্র জনতার হাত থেকে বাঁচতে দুই মহিলা পুলিশের গাড়ি দেখে সেই গাড়িতে আশ্রয় নেয়৷ কিন্তু পুলিশ তাদের কোনরূপ সাহায্য না করে উন্মত্তং জনতার হাতেই ছেড়ে দেয়৷ পরে সেই উন্মত্ত জনতা দুই মহিলাকে নগ্ণ করে শারীরিক নির্যাতন চালায়, ওই অবস্থায় রাস্তায় চলতে বাধ্য করে৷ এই নিয়ে ওই সময় গোটা দেশে শোরগোল পড়েছিল৷ দুই মহিলার একজনের স্বামী কারগিল যুদ্ধের সৈনিক ছিলেন৷ সিবিআই-এর চার্জসিটে বলা হয়েছে পুলিশের গাফিলতির কারণেই দুই মহিলা নির্যাতিত হন ও কুকী যুবকরাও আক্রান্ত হয়৷ ঘটনার সময় পুলিশকর্মী উপস্থিত থাকলেও কাউকে বাঁচাতে সাহায্য করেনি৷

বিকাশমান অর্থনীতির বেহাল দশা ক্ষয়িষ্ণুতার পথে ভারতের অর্থনীতি

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

১৪০ কোটি নাগরিকের দেশ ভারতের জাতীয় সম্পদের ৮০ শতাংশের নিয়ন্ত্রক মাত্র দশ লক্ষ ধনিক শ্রেণী৷ এরাই অর্থনীতির সমৃদ্ধির ভুল তথ্য দিচ্ছে জনগণের সামনে৷ এই রকমই মন্তব্য বিশ্ববিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের ২৪শে এপ্রিল প্রকাশিত একটি নিবন্ধে৷ ‘হাউ ইন্ডিয়াজ ইকনমি হ্যজ রিয়েলি ফেয়ারড আন্ডার মোদি’ শিরনামে নিবন্ধে জিডিপি বৃদ্ধির হার নিয়ে ভারতের দাবীকেও নস্যাৎ করা হয়েছে৷ নিবন্ধে বলা হয়েছে ভারতে ৮ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির দাবী নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে মোদির প্রাক্তন অর্থনৈতিক পরামর্শ দাতারাই৷ যে পদ্ধতিতে জিডিপির হিসাব হচ্ছে সেই পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ণ তুলেছে ওই নিবন্ধে৷

আই এম এফের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর কৃষ্ণমূর্ত্তি সুব্রহ্মণ বলেছিলেন ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ হবে৷ তাঁর এই দাবীকে নস্যাৎ করে দিয়ে আইএমএফের মুখপাত্র জুলি কোজ্যাক বলেন---কৃষ্ণমূর্ত্তি ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির যে দাবী করেছেন তা আই এম এফের মত নয়, কৃষ্ণমূর্ত্তি ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর মত ব্যক্ত করেছেন৷ আই এম এফের বিভিন্ন দেশে ২৪জন ডিরেক্টর আছেন৷ তাঁরা নিজেদের মত করে বিবৃতি দিতে পারেন৷ জুলি কোজ্যাক আরও জানান আই এম এফ এখনও মনে করে ভারতে আর্থিক বৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশই থাকবে৷ টাইম ম্যাগাজিনের ওই নিবন্ধে ভারতের আর্থিক চিত্র তুলে ধরে বলা হয় বেসরকারী ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমছে, ভোগ ব্যয় ১০ বছরে সবচেয়ে কম, গৃহস্থের সঞ্চয়ের হার গত ৪৭ বছরে সবচেয়ে কম, অপরদিকে ঋণের হার বেশী, ব্যাঙ্কগুলি পুঁজির সঙ্কটে ভুগছে, আর্থিক বৈষম্য ব্রিটিশ আমলের থেকেও বেশী, ভারতীয় পণ্যের রপ্তানি কমছে, মোদির বিকাশমান অর্থনীতি এই চিত্র তুলে ধরেছে টাইম ম্যাগাজিন৷ ভারত ৫ লক্ষ কোটির অর্থনীতিতে পৌঁছাবে---বিজেপি নেতাদের এই দাবীকে অসার প্রমাণ করতেই টাইম ম্যাগাজিনের এই নিবন্ধ৷

কম্যুনিষ্ট বর্বরতার নিষ্ঠুরতম নিদর্শন বিজনসেতু সন্ন্যাসী হত্যার ৪২তম বছরে দধীচিদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

১৯৮২ সালের ৩০শে এপ্রিল কলকাতার বিজন সেতু এলাকায় ও বণ্ডেল গেটে আনন্দমার্গের ১৭জন সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে সেদিনের শাসক দল সিপিএমের ঘাতক বাহিনী৷ এরই প্রতিবাদে ও সেই সপ্তদশ ‘দধীচি’র প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে---গত ৩০শে এপ্রিল দুপুর ২-৩০ মিনিটে দেশপ্রিয় পার্ক থেকে বিজন সেতুর উদ্দেশ্যে এক মৌন মিছিল বের হয়৷ এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত মৌন মিছিল ও তৎপরে বিজন সেতুর ওপরে প্রতিবাদ-সভায় সমবেত হন হাজার হাজার আনন্দমার্গী ও মানবতাবাদী মানুষ৷ আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের পক্ষ থেকে এই দিন মানবতা বাঁচাও দিবস পালন করা হয়৷

মিছিলটি বিজন সেতুতে পৌঁছলে আনন্দমার্গের কর্মকর্তাগণ ও আনন্দমার্গের মহিলা বিভাগের দিদিরা সপ্তদশ দধীচির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন৷ এরপর অবধূতিকা আনন্দ অভীষা আচার্যা ও অন্যান্য দিদিরা ‘লভি যদি পুনঃ মানব জীবন করিব গো মোরা তোমারই কাজ’---এই প্রভাত সঙ্গীতটি পরিবেশন করেন৷ এরপর কীর্ত্তন, মিলিত সাধনা ও শান্তিবাণী পাঠের মাধ্যমে দধীচিদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়৷ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আচার্য পূর্ণদেবানন্দ অবধূত৷

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বিংশ শতাব্দীর এই নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে দুষৃকতীদের ও তাদের নেপথ্যে থাকা সিপিএম নেতাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের দাবীতে বিভিন্ন বক্তা বক্তব্য রাখেন৷ প্রথমে বক্তব্য রাখেন আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত৷ তারপর একে একে বক্তব্য রাখেন ডাঃ বিশ্বজিৎ ভৌমিক, অধ্যাপক চণ্ডীচরণ মুড়া, আচার্য নির্মলশিবানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ অন্বেষা আচার্যা, তপোময় বিশ্বাস৷ আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত বলেন---মানুষের আদালতে আজও তার বিচার না হলেও, নিখিলের বিরাট বিধানে তাদের বিচার ইতোপূর্বেই হয়ে গেছে৷ সিপিএম আজ ২৩৪ থেকে শূন্য হয়ে গেছে৷ কিন্তু আনন্দমার্গ আজ শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতবর্ষ নয়, বিশ্বের ১৮২টি দেশে তার বিজয় পতাকা উড়িয়ে দিয়েছে৷ আনন্দমার্গ সেদিনও ছিল, আজও আছে, আগামী দিনেও থাকবে৷ সর্বশেষে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শ্রী শুভেন্দু ঘোষ ও সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংঘের জনসংযোগ সচিব আচার্য দিব্যচেতনানন্দ অবধূত৷ এইদিন কলকাতার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে বহু আনন্দমার্গী বিজনসেতুতে আসেন৷ হাওড়া ভুক্তিপ্রধান সুব্রত সাহা জেলার বিভিন্ন প্রান্তের শতাধিক মার্গীদের নিয়ে সমাবেশে যোগদান করেন৷

পরলোকে সুভাষ সরকার

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ২২শে এপ্রিল উঃ২৪পরগণা জেলার বিরাটি তুলসী বাগানের বাসিন্দা বিশিষ্ট আনন্দমার্গী শ্রীসুভাষ সরকার পরলোক গমন করেন৷ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল সত্তর বছর৷ তিনি ষাটের দশক থেকেই আনন্দমার্গে যুক্ত ছিলেন৷ তিনি আনন্দমার্গের নিষ্ঠাবান কর্মী ছিলেন৷ তাঁর প্রয়াণে মার্গী মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে৷ আগামী ২৭শে এপ্রিল শনিবার সকাল দশটায় তাঁর বাসভবনে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন হবে৷

পণ্যবাহী ট্রাক চালিয়ে প্রথমবার বাংলাদেশে গিয়ে নজির গড়লেন ভারতীয় মহিলা

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

সংবাদদাতা, বনগাঁ: জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজেদের দক্ষতা বারবার প্রমাণ করেছেন মহিলারা৷ এবার পণ্যবাহী ট্রাক চালিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে নজির গড়লেন ভারতীয় নারী৷ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্যে অনন্য নজির সৃষ্টি হল পেট্রাপোল সীমান্তে৷ দেশের বাণিজ্যের ইতিহাসেও এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত৷ রবিবার ভারতের তামিলনাড়ুর বাসিন্দা অন্নপুরানি রাজকুমার পণ্য বোঝাই ট্রাক নিয়ে পেট্রাপোল সীমান্তে এসে পৌঁছন৷ নির্দিষ্ট সময় হাতে পেয়ে যান ওদেশে যাওয়ার কার পাস৷ বাংলাদেশে পৌঁছে দ্রুত পণ্য খালি করে এদিনই খালি ট্রাক নিয়ে ফিরে আসেন অন্নপুরানি৷ এই প্রথম পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে কোনও মহিলা ট্রাক চালক পণ্য বোঝাই ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশ গেলেন৷ তিনিই প্রথম মহিলা, যিনি দু’দেশের রপ্তানিতে ট্রাক চালক হিসেবে তাঁর নাম নথিভুক্ত করেন৷ কিছুদিন আগে উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তে দু’দেশের বাণিজ্যে খতিয়ে দেখতে আসেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের সদস্য রেখা রাইকর কুমার৷ সীমান্ত বাণিজ্যে পুরুষের পাশাপাশি মহিলারাও যাতে এগিয়ে আসেন, তার উপর জোর দিতে কর্তৃপক্ষকে বলেন তিনি৷ এরপরই এদিন মহিলা ট্রাক চালক পণ্য বোঝাই ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে যান৷ পেট্রাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, এটা আজ গর্বের দিন৷ নারীরা যে পিছিয়ে নেই, এটা প্রমাণ হল৷ আগামী দিনে নারী শক্তি আরও শক্তি বৃদ্ধি করুক৷ দেশের অন্যতম স্থলবন্দর পেট্রাপোল৷ প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে পণ্য বোঝাই ট্রাক ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে৷ সীমান্তে চলাচলে নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে৷ সেই প্রতিবন্ধকতা দূরে সরিয়ে রেখে একজন নারী এভাবে এগিয়ে আসায় প্রশংসা কুড়িয়েছেন৷ দু’দেশের ব্যবসায়ীরাও খুশি৷ তাঁদের মতে, আগামী দিনে আরও বেশি করে নারীশক্তি এগিয়ে আসুক৷

চন্দননগরে মার্গীয়বিধিতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ২১শে এপ্রিল হুগলী জেলার চন্দননগর কুমোর পাড়ার বিশিষ্ট আনন্দমার্গী ধ্রুব রুইদাসের মাতৃদেবীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান আনন্দমার্গ বিধি মতে সম্পন্ন হয়৷ গত ১৮ই এপ্রিল ধ্রুব রুইদাসের মাতৃদেবী মাধবী দেবী পরলোক গমন করেন৷ তিনি দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ভুগছিলেন৷

এইদিন সকাল থেকেই স্থানীয় ইয়ূনিটের মার্গী ভাইবোনেরা শ্রীরুইদাসের বাসগৃহে সমবেত হন৷ অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রিয়াঙ্কা দাস, মোহনলাল বাইরি৷ এর পর ‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌’ মহানাম মন্ত্র কীর্ত্তন পরিবেশন করেন আচার্য বাসুদেবানন্দ অবধূত, প্রিয়াঙ্কা দাস ও মোহনলাল বাইরি৷ মিলিত ঈশ্বর প্রণিধানের পর শ্রাদ্ধ সম্পর্কে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর রচনা থেকে পাঠ করা হয়৷ এরপর আনন্দমার্গের সমাজ শাস্ত্র ও শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত৷ এরপর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান পরিচালনা করেন আচার্য বাসুদেবানন্দ অবধূত৷ সবশেষে মাধবী দেবীর স্মৃতিচারণা করেন আচার্য বাসুদেবানন্দ অবধূত ও মাধবী দেবীর পুত্র ধ্রুব রুইদাস, পুত্র বধূ ও চিন্ময়৷

শ্যামনগরে সেমিনার

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ১৩ই এপ্রিল উত্তর ২৪পরগণা জেলার শ্যামনগর আনন্দমার্গ স্কুলে আনন্দমার্গ দর্শনের উপর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ আলোচনা সভায় স্থানীয় ইয়ূনিটের মার্গীভাই বোন ছাড়াও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন৷ আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রবীন সন্ন্যাসী আচার্য অভিব্রতানন্দ অবধূত আনন্দমার্গ দর্শনের সামাজিক অর্থনৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ের উপর আলোচনা করেন৷ আলোচনা শেষে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন---বর্তমান সমাজের সর্বস্তরে যে অবক্ষয় ও অর্থনৈতিক বৈষম্য তা দূরকরে সার্বিক শোষণমুক্ত আদর্শ সমাজ গড়তে হলে আনন্দমার্গ ছাড়া অন্য কোন পথ নেই৷

আলোচনা সভার আয়োজন করেছিলেন শ্যামনগর আনন্দমার্গ স্কুলের অধ্যক্ষা অবধূতিকা আনন্দমণিষা আচার্যা, তাঁকে সর্বতভাবে সাহায্য করেন প্রকাশ সাহা ও স্থানীয় ইয়ূনিটের মার্গী ভাইবোনেরা৷